ফেইসবুকের অজানা তথ্য


১৯৮৪ সালে নিউ ইয়র্কে জন্ম নেওয়া কম্পিউটার প্রোগ্রামার মার্ক জুকারবার্গ ফেইসবুক প্রতিষ্ঠা করেন ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে। ২০০৪ হলো ফেবুকের প্রতিষ্ঠা সাল।


২০০৩ সালের ২৮ অক্টোবর মার্ক এলিয়ট জুকারবার্গ ফেইসম্যাশ ডট কম নামে একটি সাইট প্রতিষ্ঠা করে। এই ফেইসম্যাশ সাইটের কাজ তেমন ভালো ছিলো না। এই সাইটে দুইটা ছবি পাশাপাশি রাখা হত। এই দুই ছবি থেকে ভিজিটররা কে “হট” আর কে “হট না/নট” তা তুলনা করতো।


মার্ক জুকারবার্গ স্কুল পড়া শেষ করে ভর্তি হন হার্ভার্ড কলেজে। ফেইসম্যাশ সেই
সময়কার কথা। হার্ভার্ড কলেজের ডাটাবেজ হ্যাক করে স্টুডেন্টদের ছবি নিয়ে তা ফেইসম্যাশে ব্যবহার করে ভিজিটরদের “হট” অথবা “নট” বের করার সুযোগ দেন।


পরে কলেজের স্টুডেন্টরা এই সাইট বন্ধ করতে তাকে বাধ্য করে। এ ব্যপারে মার্ক জুকারবার্গ বলেছিলো;


“ একটা ব্যপার পরিষ্কার এই সাইট বানানোর জন্য আমি একটা জার্ক! যাই হোক, কেউ না কেউ এটা এমনেই করতো। ”



হাউজসিস্টেম নামে হার্ভার্ড কলেজে একটা ওয়েব সার্ভিস ছিলো। এরপর ঐ বছরই “দি ফেসবুক” কনসেপ্ট আসে এই হাউজ সিস্টেমের একটা নতুন ফিচার হিসেবে। ২০০৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এরন গ্রীন্সপ্যান নামে এক স্টুডেন্ট আনেন এটি।


জুকারবার্গ পরে হার্ভার্ড কানেকশন নামে একটা সাইটে তার কিছু বন্ধুর ( ক্যামেরুন, টেলর,ডিভিয়া ) জন্য কাজ করা শুরু করেন।


মার্ক জুকারবার্গ ২০০৪ সালের ১১ই জানুয়ারী দি ফেইসবুক ডট কম ডোমেইন কিনে নেন। দি ফেসবুক ডট কমের চেহারা অনেকটা এরকমঃ


the_facebook_dot_com


দি ফেসবুক ডট কম চালুর ২৪ ঘন্টার মধ্যে জুকারবার্গ ১২০০ জন স্টুডেন্ট এর রেজিস্ট্রেশন দেখতে পান। এখানে তার সাথে কাজ করেন তার রুমমেট এডুয়ারড সারভেরিন,আন্ড্রো ম্যাক্কোলাম, ডাস্টিন মস্কভিটয। মূলত হার্ভার্ড কানেশন ডট কমে কাজ করার সময়কার ফিচার এই দি ফেসবুক ডট কম। তাই জুকারবার্গ এর সেই বন্ধুরা ( ক্যামেরুন, টেলর,ডিভিয়া ) ছয় দিনের মাথায় তার বিরুদ্ধে আইডিয়া চুরির অভিযোগ আনে।


এদিক দিয়ে ফেইসবুকের ইউজার সংখ্যা খুব দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে। ২ মাসের মাথায় হার্ভার্ড ছড়াও আরো বেশ কিছু কলেজে দি ফেইসবুক পরিচিতি পায়। জুন মাসের মধ্যে সাইটে প্রায় দেড় লাখ ( ১৫০,০০০ ) ইউজার প্রোফাইল খুলে। দি ফেইসবুকের সম্ভাবনা দেখে ওই মাসেই পেপাল এর ফাউন্ডার ফেইসবুকের ১০ দশমিক ২ পারসেন্ট এর শেয়ার কিনে নেয় পাঁচ লাখ ইউ এস ডলারে।


কিন্তু সেপ্টেম্বার মাসে এসে জেগে উঠে সেই পুরনো সমস্যা। ক্যামেরুন, টেলর ও ডিভিয়া মামলা করে বসে দি ফেইসবুকের নামে। যদিও সেই বছর ডিসেম্বারেই ১ মিলিয়ন ইউজার হয়ে যায় দি ফেইসবুকে।


২০০৫ এর মে মাসে এক্সেল পারটনারস ১২ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করে দি ফেইসবুক ডট কমে।


২০০৬ সালে দেখা যায় গতবছর অর্থাৎ ২০০৫ সালে ফেইসবুক সাড়ে তিন মিলিয়ন ডলারের উপরে লস করে। এরপর ২০০৬ এর সেপ্টেম্বারে ১৩ বছর বয়সের উপরে সবার জন্য ফেসবুক ওপেন করে দেওয়া হয়।


২০০৭ সালে ফেসবুকে আরো বিশাল অঙ্কের দুটি ইনভেস্টমেন্ট দেখা যায়। হং কং এর এক লোক ষাট মিলিয়ন ডলার ও মাইক্রোসফট ২৪০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে ফেইসবুকের এক দশমিক ছয় পারসেন্ট কিনে নেয়।


২০০৮ এ এসে ফেইসবুক আইনগত সমস্যাগুলো সমাধান করে এবং প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলারের কোম্পানীতে রুপ নেয়। ২০০৯ এসে দেখা যায় মাই স্পেস ডট কমকে পেছনে ফেলে দিয়েছে ফেইসবুক।


এরপর ফেইসবুককে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১২ সালে দেখা যায় মার্ক জুকারবার্গ এর সম্পত্তির পরিমান প্রায় সাড়ে নয় বিলিয়ন ডলার। জুকারবার্গ নিজ যোগ্যতায় হওয়া পৃথিবীর দ্বিতীয় কনিষ্ঠ বিলিনিয়র।


২০১১ তে এসে ফেইসবুকে ১০০ বিলিয়নের বেশি ছবি আপলোড করেছে ইউজাররা। এরপর ওই বছরই ফেইসবুকে ভিডিও কল এর জন্য স্কাইপির সাথে চুক্তি করে ফেইসবুক।


অক্টোবর ২০১২ তে ফেসবুকে ১ বিলিয়ন ইউজার রেজিস্ট্রেশন করে। এবং ২০১২ তেই মার্ক জুকারবার্গ বিয়ে করেন প্রিসিলা চ্যানকে। ২০১০ সালে টাইম ম্যাগাজিনের পারসোন অব দি ইয়ার হন ফেসবুকের জনক মার্ক জুকারবার্গ!

0 Comment "ফেইসবুকের অজানা তথ্য"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your comments